December 22, 2024, 3:09 pm
বিশেষ প্রতিবেদক:
কুষ্টিয়ার খোকসায় ১৬ মার্চ একজনের মৃত্যুর পর ১৭ মার্চ করোনা আক্রান্ত আরেক জনের মৃত্যু হয়েছে। একদিনে এ উপজেলায় ৯ জন নতুন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এক সপ্তাহে একই বাড়িতে ১২ জন আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ প্রশাসন, চিকিৎসক এবং জনপ্রতিনিধিরা মিলে এই বাড়ির লোকদের বাইরে না আসার জন্য অনুরোধ করছেন।
খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. প্রেমাংশু বিশ্বাস জানান, পৌর এলাকার কমলাপুরে আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর শাশুড়ী আনোয়ারা বেগম (৮৫) কে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৭ মার্চ সকালে করোনা তার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে অ্যাম্বুলেন্সে করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুপুর ১২ টায় মারা যান। আনোয়ারা বেগমের বাড়ি উপজেলার চাঁদট গ্রামে। তিনি করোনা আক্রান্ত স্বাস্থ্য সহকারী জেসমিন আরার সাথেই কমলাপুরের বাড়িতে ছিলেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহিলা সদস্যরা নিয়ম মোতাবেক তার দাফন সম্পন্ন করেছে।
আগের দিন ১৬ মার্চ উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নের ওমরপুর গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান বিশ্বাস (৫৭) করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। কৃষক সাইদুর রহমান বিশ্বাস দীর্ঘদিন ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত সপ্তাহে ভর্তি হন। গত রবিবারে করোনা পরীক্ষার জন্য তার নমূনা পাঠানো হয় কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে। সেখান থেকে সোমবার রাতে তার করোনা পজিটিভ রেজাল্ট আসে। খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডাক্তার প্রেমাংশু কুমার বিশ্বাস জানান, মঙ্গলবার ভোর রাতে হাসপাতাল বেডে তার মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, টানা তিন মাস খোকসা উপজেলায় কোন করোনা রোগী ছিলো না। ১২ মার্চ স্বাস্থ্য সহকারী জেসমিন আরা, তার স্বামী এবং কাজের মেয়ে করোনা সনাক্ত হয়। ওই বাড়ি এবং পাশের বাড়ি মিলিয়ে ১৬ মার্চ আরো ৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
কমলাপুরের এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. প্রেমাংশু বিশ্বাস। তিনি উপজেলা এবং পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ওই বাড়ির লোকজনকে মোবাইল ফোনে আইসোলেশনে থাকতে বলেছেন। খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন বলেছেন, আমরা স্থানীয় কাউন্সিলর, পৌরসভার মেয়র, পুলিশ প্রশাসন সবাই ওই বাড়ির ওপর নজর রাখতে বলেছি। তাদের সমন্বয়ে তাদের আইসোলেশন নিশ্চিত করা হচ্ছে। ওই বাড়ির সবাইকে বাড়ির বাইরে না যাওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, করোনা বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে মাইকিং করার চিন্তা চলছে।
খোকসা উপজেলায় এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৮ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৬জন। আর ১২ জন আক্রান্ত রোগী এখন আইসোলেশনে আছেন। এর মধ্যে দুজন আছেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে- বলেন ডা. প্রেমাংশু।
এদিকে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, করোনা আক্রান্তের প্রবণতা বৃদ্ধির কথা বলে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। কুষ্টিয়া জেলায় এখন পর্যন্ত ৩৯৪৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ১৬ মার্চ আক্রান্ত হয়েছেন ১৪জন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৯১ জন। এখন আইসোলেশনে আছেন ৫০ জন। এর মধ্যে ১১ জনই আছেন হাসপাতালে।
Leave a Reply